ক্ষোভে ফুঁসছে ফিলিস্তিন, ফের যুদ্ধের শঙ্কা

অধিকৃত পশ্চিম তীরের জেনিন শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলের হামলায় একদিনেই ১০ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত আরো ২০ জন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ক্ষোভে ফুঁসছে ফিলিস্তিনিরা। ইসরায়েল-ফিলিস্তিন এ সংঘাতের দ্বিরাষ্ট্রিক সমাধানে কয়েকদিনের মধ্যেই মিশর, ইসরায়েল ও পশ্চিম তীর সফরে যাচ্ছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিংকেন।

বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

দুই দশক ধরে ইসরায়েলি বাহিনীর একক অভিযানে অধিকৃত পশ্চিম তীরে একদিনে সবচেয়ে বেশি ফিলিস্তিনি নিহতের ঘটনা ঘটেছে বৃহস্পতিবার। জেনিনে ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে একদিনে এতজনের মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছেন সাধারণ ফিলিস্তিনিরা।

শুক্রবার (২৭ জানুয়ারি) এরই পরিপ্রেক্ষিতে গাজা উপত্যকা থেকে রকেট ছুড়েছে ফিলিস্তিনিরা। ইসরায়েলি বাহিনী রকেটের কথা জানিয়ে দাবি করেছে, আয়রন ডোমের সাহায্যে তারা রকেট প্রতিহত করেছে।

নিহতদের মরদেহ নিয়ে শোক মিছিল করেন ফিলিস্তিনিরা। এ সময় ইসরায়েলবিরোধী স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে চারপাশ। স্বজনদের আহাজারিতে ভারি হয়ে ওঠে পরিবেশ। ইসরায়েলের কট্টর ডানপন্থি নতুন সরকার ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়ার কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই এক অভিযানে এমন হতাহতের ঘটনা ঘটল।

এ ঘটনায় ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছেন। ইসরায়েলের সঙ্গে নিরাপত্তা সমন্বয় স্থগিত রাখা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

আব্বাস বলেন, ‘আমাদের জনগণের ওপর আগ্রাসনের কারণে এবং নিরাপত্তাসহ স্বাক্ষরিত চুক্তিগুলো লঙ্ঘন করায় আমরা মনে করি, ইসরায়েলি দখলদার সরকারের সঙ্গে নিরাপত্তা সমন্বয় এখন আর বিদ্যমান নেই৷ আমরা ফিলিস্তিনি সন্তানদের সম্মানজনক অবস্থানের জন্য এবং আমাদের জনগণের স্বার্থরক্ষার জন্য স্যালুট জানাই। বসতি স্থাপনকারী সন্ত্রাসবাদ এবং দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে আমাদের জনগণকে আরও কিছু করার আহ্বান জানাই।’

এ অবস্থায় ইসরায়েল ফিলিস্তিন সংকট আরও বাড়ার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। এমনিতেই প্রায় প্রতিদিন অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে প্রাণ হারাচ্ছেন নিরীহ ফিলিস্তিনিরা। নেতানিয়াহু আবারও ক্ষমতায় আসার পর থেকে উত্তেজনা বাড়ছে।

এদিকে ফিলিস্তিন-ইসরায়েল এমন সংকটের মধ্যেই কয়েকদিন পর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিংকেন মিশর, ইসরায়েল ও পশ্চিম তীর সফরে যাচ্ছেন।

মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সফরের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছে, ব্লিংকেন অংশীদারদের সঙ্গে যে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করবেন, তার মধ্যে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের দ্বিরাষ্ট্রিক সমাধানের বিষয়টি রয়েছে।

সূত্র: আল-জাজিরা, রয়টার্স