• রোববার ২৮ মে ২০২৩ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ১৪ ১৪৩০

  • || ০৭ জ্বিলকদ ১৪৪৪

ড্রাগন চাষে বাবুলের ৮ লাখ টাকা লাভের আশা!

দৈনিক গাইবান্ধা

প্রকাশিত: ২০ মে ২০২৩  

ড্রাগন ফলের চাষ করে স্বাবলম্বী পিরোজপুরের বাবুল হাওলাদার। তিনি ২০১৭ সালে বিদেশ থেকে দেশে ফিরে অন্যান্য কাজ করলেও সফলতা ধরা দিচ্ছিলো না। তারপর অনলাইনের মাধ্যমে ড্রাগনের চাষ দেখে আগ্রহী হন। ১ একর জমিতে ড্রাগনের বাগান তৈরী করে আজ তিনি স্বাবলম্বী। বর্তমানে তিনি নিজে চাষের পাশাপাশি অন্যদেরও পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

জানা যায়, কৃষক বাবুল হাওলাদার পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলার টগরা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি অনলাইনের মাধ্যমে ড্রাগন ফলের চাষ দেখে ২০২০ সালে ১ একর জমিতে চাষ শুরু করেন। এতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ১৫০০ চারা সংগ্রহ করে জমিতে রোপন করেন। ফলটি বিদেশি ও আমাদের দেশে এর চাহিদা দিন দিন বাড়াতে থাকায় এর বাজারদর বেশি থাকে। এছাড়াও এই ফলটির অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ডায়াবেটিস, ক্যান্সার, হৃদরোগ ও আর্থাইটিস রোগ নিরাময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বর্তমানে তার বাগানে ৫ হাজারেরও বেশি ড্রাগন ফলের গাছ রয়েছে। তিনি আশা করছেন এবছর ফল বিক্রি করে ৬-৭ লাখ টাকা আয় করতে পারবেন।

ড্রাগন চাষি বাবুল হাওলাদার বলেন, নানা জটিলতার কারণে আমি বিদেশ থেকে ফেরত আসি। তারপর অন্যান্য অনেক কাজ করি তাতে কোনো লাভ হয়নি। তারপর ২০২০ সালে অনলাইনের মাধ্যমে ড্রাগন ফলের চাষ দেখি। আমিও এর চাষ করতে পরিকল্পনা করি। খুলনা, ঝিনাইদহ ও ঢাকার গাজীপুরসহ বিভিন্নস্থান থেকে ১৫০০ চারা সংগ্রহ করে ১ একর জমিতে রোপন করে চাষ শুরু করি। বর্তমানে বাণিজ্যিকভাবে বাউ ড্রাগন ফল ১, ২ ও ৩ চাষ করছি। এখন আমার খামারে প্রায় ৫ হাজার গাছ রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, ড্রাগনের পাশাপাশি সিডেসি লেবু, খেজুর, চুঁই ঝালসহ বিভিন্ন কিছুর চাষ করছি। মধ্য এপ্রিল থেকে মধ্য অক্টোবর পর্যন্ত এর চারা রোপনের সময়। ফুল ফোটার ৩৫-৪০ দিনের মধ্যে ফল পরিপক্ক হয়। তখন বাজারজাত করা যায়। বাজারে এই ফলের দাম বেশি। তাই পাইকারি দরে বিক্রি করে লাভবান হতে পারছি। এছাড়াও বেশি লাভের আশায় খুচরাও বিক্রি করি। বাগানটি গড়ে তুলছে এখন পর্যন্ত ১৮-২০ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। গত বছর থেকে ফল বিক্রি শুরু করেছি। আশা করছি এবছর সকল উঠে যাবে আর প্রায় ৬-৭ লাখ টাকা আয় করতে পারবো।

তার ছেলে মিরাজুল ইসলাম বলেন, আমিও বাবার সাথে ড্রাগন চাষে যোগ দেই। এই ফলের আকার বড় হয়। পাকা ফলের খোসার রং লাল হয়, শাঁস গাঢ় গোলাপী রঙের, লাল ও সাদা এবং রসালো প্রকৃতির হয়ে থাকে। বীজগুলো ছোট কালো ও নরম হয়ে থাকে। সমতল বা পাহাড়ি ভূমি দুই জায়গাতেই এর চাষ করা যায়।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. নজরুল ইসলাম সিকদার বলেন, চলতি বছর পিরোজপুর জেলায় ৫ হেক্টর জমিতে ড্রাগন ফলের চাষ করা হয়েছে। যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৪ টন। এর চাষে প্রথমদিকে বেশি খরচ হলেও পরে বেশি খরচ করতে হয় না। জেলার ইন্দুরকানীর কৃষক বাবুল হাওলাদার এই ফলের চাষ করে সফলতা পেয়েছেন। তিনি এই ফল চাষে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমে চাষ পারলে লাভবান হওয়া সম্ভব। এছাড়াও এর চাষ আরো বৃদ্ধি করতে আমরা চাষিদের উৎসাহিত করছি।

দৈনিক গাইবান্ধা
দৈনিক গাইবান্ধা