দৈনিক গাইবান্ধা
  • বৃহস্পতিবার ০৫ অক্টোবর ২০২৩ ||

  • আশ্বিন ১৯ ১৪৩০

  • || ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৫

কুল চাষে লাভবান বিদেশ ফেরত সৌদাত হোসেন

দৈনিক গাইবান্ধা

প্রকাশিত: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩  

দেশের টানে বিদেশ থেকে ফিরে এসেই কুল চাষ করেন। সফলতার মুখ দেখতেও বেশি দিন সময় লাগেনি। বলছি বিদেশ ফেরত কুষ্টিয়ার কুল চাষি সৌদাত হোসেনের কথা। তিনি বাণিজ্যিকভাবে কুল চাষ করে বেশ সফলতা পেয়েছেন। বর্তমানে তার এই সফলতা দেখে অনেকেই কুল চাষে আগ্রহী হচ্ছে।

জানা যায়, সৌদাত হোসেন কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার চিথলিয়া এলকার পাহাড়পুর গ্রামের বাসিন্দা। বেকারত্ব দূর করতে কাজের সন্ধ্যানে বিদেশে গিয়েছিলেন। সেখানে তেমন সুবিধা করতে না পেরে দেশে ফিরে আসেন। তারপর অনলাইনে দেখে কুল চাষে আগ্রহী হন। পরে জমি বর্গা নিয়ে বাণিজ্যিকভাবে কুল চাষ শুরু করেন। বর্তমানে তিনি ৭ বিঘা জমিতে কুল, সাড়ে ৪ বিঘা জমিতে মাল্টা ও ৩ বিঘা জমিতে পেয়ারা চাষ করছেন। তার এমন সফলতা দেখে আশেপাশের অনেকেই ফল চাষে আগ্রহী হয়েছেন।

সৌদাত হোসেন বলেন, পড়ালেখা শেষ করে জীবিকার তাগিদে কুয়েত গিয়েছিলাম। পরে দেশের টানে ও দেশে কিছু একটা করবো এই চিন্তায় ফিরে্ আসি। অনলাইনে দেখে দেশে ফিরে কুল চাষের পরিকল্পনা করি। তারপর দেশে এসে প্রথমে ৪ বিঘা জমিতে কুল চাষ করি। চলতি বছর নতুন আরো ৩ বিঘা জমিতেও চাষ করছি।

তিনি আরো বলেন, উঁচু জমি যেখানে পানি জমে না এবং বেলে দোয়াশ মাটিতে কুল বেশি ভালো হয়। চারা লাগানোর ৭-৮ মাসের মধ্যেই ফলন পাওয়া যায়। প্রথম বছর ফল কম পাওয়া গেলেও পরের বছর থেকে ব্যাপক ফলন পাওয়া যায়। চাষে জৈব সারের ব্যবহার বেশি কার্যকর। বছরে গড়ে প্রতিটি গাছ থেকে ২০ কেজি করে ফল পাওয়া যায়। আমি ৪ বিঘা জমিতে বল সুন্দরী, ২ বিঘা জমিতে ভারত সুন্দরী এবং ১ বিঘা জমিতে কাশ্মেরী সুন্দরী জাতের কুল চাষ করেছি। এতে বিঘা প্রতি ২০০-২২০টি গাছ রয়েছে।

সৌদাত আরো বলেন, আমি গত দুই সপ্তাহ আগে থেকে কুল বিক্রি শুরু করি। প্রথমে দাম বেশি থাকলেও এখন দাম কমেছে। চলতি বছর ৮-৯ লাখ টাকার কুল বিক্রির আশা করছি।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. হায়াত মাহমুদ বলেন, সারাদেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলায় বাণিজ্যিকভাবে কুল চাষ হচ্ছে। এই ফল চাষ বেশ লাভজনক। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এই জেলায় কুলের বাম্পার ফলন হয়েছে। উচ্চমূল্যে এই ফল বাজারে বিক্রি করে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। আমরা চাষিদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দেয় সহযোগিতা করছি।

যশোর অঞ্চলে টেকসই কৃষি সম্প্রসারণ প্রকল্পের পরিচালক (পিডি) রমেশ চন্দ্র ঘোষ বলেন, কুষ্টিয়াসহ যশোর অঞ্চলের ছয়টি জেলায় বাণিজ্যিকভাবে কুল চাষের জন্য কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। নিরাপদ উপায়ে উচ্চ মূল্যের ফল বাগান তৈরিতে প্রকল্প মেয়াদে কুলসহ ৯টি ফসলের ৬ হাজার ৯৯৬টি প্রদর্শনীর মাধ্যমে কৃষকদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করণেও আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

দৈনিক গাইবান্ধা
দৈনিক গাইবান্ধা