লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে জিডিপির প্রবৃদ্ধি বেশি অর্জিত হবে: অর্থমন্ত্রী
চূড়ান্ত হিসাবে জিডিপির প্রবৃদ্ধি, লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি অর্জিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। সম্পুরক বাজেটের উপর সাধারণ আলোচনায় সংসদ সদস্যদের বক্তব্যের জবাবে তিনি এই আশা প্রকাশ করেন। এর আগে ওই আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপির সংসদ সদস্য মো. হারুনুর রশীদ দায়মুক্তি না দিয়ে অর্থ পাচারকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন।
সোমবার স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হওয়া সংসদ অধিবেশনে অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি বাজেটেই সরকারের উন্নয়নের অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনের লক্ষ্যে সামষ্টিক অর্থনীতির বিভিন্ন সূচকসহ সরকারের আয়-ব্যয়ের হিসাব প্রাক্কলন করা হয়। পরে বাজেট বাস্তবায়নকালে যৌক্তিক কারণে কখনো কখনো কিছুটা সংশোধনের প্রয়োজন হয়।
এ বছরের প্রেক্ষাপট সকলের জানা। কভিড-১৯ ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে গোটা বিশ্ব অর্থনীতিতে অস্বাভাবিক মূল্যস্ফীতি ঘটেছে। যার কমবেশি বাংলাদেশের অর্থনীতিতে আঘাত হেনেছে। সেটা বিবেচনায় নিয়ে সম্পূরক বাজেটে যৌক্তিক কারণে ব্যয় এবং ঘাটতি কিছুটা সমন্বয় করতে হয়েছে। তবে আমাদের জিডিপির প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৭ দশমিক ২ শতাংশ অপরির্তিত রয়েছে।
অর্থ মন্ত্রী আরো বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের সংসদ সদস্য এখানে কিছু কথা বলেছেন। কিন্তু আমি আজকে কোনো জবাব দেবো না। জবাব দেবো বাজেট আলোচনার সময়। বাজেট বক্তৃতায় যখন সময় পাবো, তখন অবশ্যই জবাব দেবো।
এর আগে বিএনপির হারুনুর রশীদ তার বক্তব্যে বিদেশে অর্থপাচার, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের জন্য বরাদ্দের বিরোধিতাসহ সম্পূরক বাজেটের বিভিন্ন খাতে বরাদ্দ প্রস্তাবের কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, যারা বিদেশে অর্থ পাচার করেছে তাদের একজনকেও গ্রেফতার বা আইনের আওতায় আনা যায়নি। তাই পাচার হওয়া টাকা ফিরিয়ে আনতে পাচারকারিদের দায়মুক্তি দিয়ে কোনো লাভ হবে না। এতে লাভের চেয়ে ক্ষতি বেশী হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
হারুনুর রশীদ বলেন, দেশের অর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলি দূর্বল। লুটেরা দুনীতিবাজরা বিদেশে অর্থ পাচার করছে। গত ১০/১৫ বছরে লাখ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে। পাচারকারিদের আইনের আওতায় আনা যায়নি। তারা ধরা ছোয়ার বাইরে আছে। তিনি বলেন, পিকে হালদারকে আমরা কেন গ্রেফতার করতে পারলাম না? সে ভারতে গ্রেফতার হয়েছে, ভারত আমাদের বন্ধু রাষ্ট্র, কেন তাকে ভারত থেকে আনতে পারলাম না। বাংলাদেশের যে সব ক্রিমিনালকে ভারত গ্রেফতার করেছে তাদের দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে। পাচার হওয়া টাকা ফিরিয়ে আনতে হবে।
সম্পুরক বাজেটের সমালোচনা করে বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য বলেন, বিভিন্ন খাতে বরাদ্দ বাড়িয়ে, তা অপচয় করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনে ব্যয় বাড়ানো হয়েছে। দেশে কি নির্বাচন হচ্ছে? বরং নির্বাচন কমিশন অসহায়ত্ব প্রকাশ করছে। তিনি বলেন, আর্থিক সংগঠসগুলোর ব্যবস্থাপনায় যে দূর্বলতা রয়েছে, তা কাটিয়ে প্রতিষ্ঠাগুলোকে শক্তিশালী করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, আইনের প্রয়োগের ক্ষেত্রে বৈষম্য হচ্ছে। সরকারি দলের এক আইন, বিরোধী দলের জন্য আরেক আইন। নারীদের নিরাপত্তা নেই। জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান তিনি। সাধারণ আলোচনায় আরো অংশ নেন আওয়ামী লীগের ওয়াসিকা আয়শা খান ও আহসানুল ইসলাম টিটু এবং জাতীয় পার্টির রওশন আরা মান্নান।
দৈনিক গাইবান্ধা