শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪ || ১৪ চৈত্র ১৪৩০

প্রকাশিত: ১২:৫৮, ২৭ মে ২০২৩

চরের ঘাসে সংসার চলে রহিম আলীর

চরের ঘাসে সংসার চলে রহিম আলীর

বগুড়ার সারিয়াকান্দির যমুনা নদী এখন পানিশুন্য। নদীর চর যেন বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ। যমুনা পাড়ের মানুষরা নানা ধরনের ফসলের চাষ করেন এই চরের মাঠে। তবে ব্যতিক্রম একজন রয়েছেন। যার কাজ নিড়ানি দিয়ে জমির আগাছা হিসেবে ঘাস তোলা। সেই ঘাস বাজারে নিয়ে বিক্রি করেন। এ আয় দিয়েই সংসার চালান তিনি।  

এই ঘাস বিক্রেতার নাম রহিম আলী হুইল। তিনি সদর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের চর বাটিয়া গ্রামের শাহার আলীর ছেলে। স্ত্রী আছিয়া ও দুই ছেলে সন্তানকে নিয়ে সংসার তার।  বেশ কয়েক বছর আগে বসতভিটাসহ ফসলি সব জমি চলে গেছে যমুনার গর্ভে। এখন স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে বাটির চরে বাস করেন এই যুবক।

রহিম জানান, সকালে ঘাস তোলার পর দুপুরে তা নিয়ে আসেন সারিয়াকান্দি বাজারে বিক্রি করতে। সন্ধায় বাজায়-সদাই করে বাড়ি ফিরেন তিনি। বাড়ি থেকে বাজার প্রায় ৩ কিলোমিটার দুরে। পথের মধ্যে একটি নৌ-ঘাট রয়েছে। কাঁধে ঘাসের ভাড় নিয়ে প্রতিদিন তিনি যান সারিয়াকান্দির ঘাসের বাজারে। প্রতি ভাড় ঘাস ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হয়। 

বৃষ্টি-বাদল কোন কিছুই তার কাছে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় না। ঘাস বিক্রির টাকা দিয়ে বাজার করেন। বিক্রি না হলে তার চুলায় হাঁড়ি ওঠে না। পরিবারে স্ত্রী ও দুই সন্তানের মুখে আহার জোটাতে নিত্য দিনকার সংগ্রাম এটি বলে জানান রহিম।

এমন পেশা নেয়ার কারণ জানতে চাওয়া হয় রহিম আলীর কাছে। তিনি বলেন, এ ছাড়া আমি আর কি করবো? চরে অনেক কাজ আছে ঠিকই, কাজে অনেক লোকের দরকারও পরে, কিন্তু সেসব কাজে ডাক পড়ে না আমার। যার জন্য বাধ্য হয়ে এটাকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছি। আমি সাধারণত চরের জমি থেকে দুর্বা ঘাস তুলে থাকি। এ ঘাসের চাহিদা বাজারে অনেক। প্রাকৃতিভাবে চরে জন্মে থাকে এ ঘাস। এক ভাড় ঘাস বেচে আমি পাই, আড়াইশ থেকে তিনশ টাকা পর্যন্ত। এতে ভালোই চলে আমার সংসার। 

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রহিম আলী হুইল সহজ-সরল ও নরম প্রকৃতির একজন মানুষ। চরে অনেক রকমের কৃষি কাজ রয়েছে কিন্তু সে সব কাজে আগ্রহী না রহিম। পরিত্যক্ত জায়গা-জমিতে প্রাকৃতিকভাবে অনেক রকমের ঘাস হয়ে থাকে। চরের এ সব জায়গা থেকে প্রতিদিন ঘাস তোলেন রহিম আলী হুইল।  উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার মো. নাইম হোসেন বলেন, সমাজে অনেক রকমের লোক হরেক রকমের কাজকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন। যদি রহিম আলী হুইলকে সরকারিভাবে কোনো সাহায্য সহযোগিতা করা যায় হয় তবে আমার তা করবো । 

দৈনিক গাইবান্ধা

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

সর্বশেষ