বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪ || ১৩ চৈত্র ১৪৩০

প্রকাশিত: ১১:৩৩, ২১ মে ২০২৩

‘আমি মরে গেলেও তোমরা ওকে ছাড়বা না’

‘আমি মরে গেলেও তোমরা ওকে ছাড়বা না’

মাদারীপুরের রাজৈরে দাহ্য পদার্থ ঢেলে আগুন দিয়ে স্ত্রী মাহামুদা আক্তারকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামী আফিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে। শুক্রবার গভীর রাতে উপজেলার বদরপাশা ইউনিয়নের কাজী কাঁঠাল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। গুরুতর অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করার পর শনিবার দুপুরে তার মৃত্যু হয়। নিহত মাহামুদা আক্তার ওই গ্রামের আনোয়ার কাজীর মেয়ে। 

জানা গেছে, পাঁচ বছর আগে মাহমুদার একটি বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু বিয়ের দুই মাস যেতেই তাদের বিচ্ছেদ হয়। এর কিছুদিন পর মাহমুদার সঙ্গে টাঙ্গাইলের ভুয়াপুর এলাকার আফিদুল ইসলামের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরপর দুই বছর আগে তাদের বিয়ে হয়। প্রথম বিয়ের কথা স্বামীর কাছে গোপন করেন মাহমুদা। বিয়ের এক বছর পর তার প্রথম বিয়ের কথা জানতে পারেন আফিদুল।

এছাড়া মাহমুদা রাজৈরের টেকেরহাটে একটি প্রাইভেট হাসপাতালে চাকরি করতেন। আফিদুল তাকে চাকরি করতে নিষেধ করেন। এসব নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া লেগেই থাকতো। এর জেরে আফিদুল ইসলাম ও তার লোকজন শুক্রবার রাত ৩টার দিকে তরল জাতীয় দাহ্য পদার্থ ঢেলে মাহমুদার শরীরে আগুন দিয়ে ঝলসে দেন। পরে গুরুতর অবস্থায় প্রথমে মাহমুদাকে রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মাহমুদা।

মৃত্যুর আগে মায়ের কাছে স্বামীর বিচার চেয়ে আকুতি করে মাহমুদা আক্তার বলেন, ‘আমার স্বামী শুক্রবার রাতে তরল কিছু ছিটিয়ে গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। আমি মরে গেলেও তোমরা ওকে ছাড়বা না। ওর বিচার কইরো।’ 

নিহত মাহমুদার বাবা আনোয়ার কাজী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমার জামাইয়ের সঙ্গে মেয়ের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। এ কারণেই জামাই ও তার লোকজন আমার মেয়েকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মেরেছে। আমি এর বিচার চাই।

নিহতের মা জাহেদা বেগম বলেন, আমি রাত ৩টার সময় ছাগলের বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানোর জন্য বাইরে বের হই। তখন ব্রিজের ওপর দুজন লোক দেখি। তার কিছুক্ষণ পর দেখি ঘরের বাতি নেভানো। এরপর আমার মেয়ের চিৎকার করে বলছে- ‘আমাকে আফিদুল আগুন দিয়েছে। আমাকে বাঁচাও।’ মেয়ের চিৎকার শুনে ওর বাবা গিয়ে পানি দিয়ে আগুন নেভায়। এরমধ্যে ওর শরীরের অধিকাংশ অংশ পুড়ে যায়। আমি আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই।

এদিকে ঘটনার পর থেকে নিহতের স্বামী আফিদুল ইসলাম পলাতক। তার মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া গেছে। রাজৈর থানার ওসি (তদন্ত) সঞ্জয় কুমার ঘোষ বলেন, মাহমুদা আক্তার নামে একজন আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা গেছেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

 

দৈনিক গাইবান্ধা

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

সর্বশেষ