• শুক্রবার   ২৪ মার্চ ২০২৩ ||

  • চৈত্র ৯ ১৪২৯

  • || ২৯ শা'বান ১৪৪৪

উপহারের কবুতরে ভাগ্য বদল রুবেলের

দৈনিক গাইবান্ধা

প্রকাশিত: ২৫ জানুয়ারি ২০২৩  

৩৪ বছরের রুবেল সিকদার। বছর দুই আগেও ছিলেন বেকার। মাঝে মধ্যে কিছু  শাক-সবজি ঢাকায় নিয়ে বিক্রি করতেন। এতে যা আয় হতো তা দিয়েই স্ত্রী-সন্তান ও বাবা-মা নিয়ে কোনো মতে দিন পার করতেন তিনি। একদিন এক বন্ধুর দাওয়াতে তার বাড়িতে যান রুবেল। সেখান থেকে ৫ জোড়া কবুতর উপহার হিসেবে পান তিনি। উপহার পাওয়া কবুতর দিয়ে শখের বসে শুরু করেন কবুতরের খামার। সেই ৫ জোড়া দিয়ে শুরু করা খামারে এখন রয়েছে বিভিন্ন জাতের একশ জোড়া কবুতর। খামার দেখাশোনার দায়িত্বে রয়েছেন দুই যুবক। 

রুবেল সিকদার গাজীপুরের কালীগঞ্জের নাগরী ইউপির পানজোরা গ্রামের আব্দুল কাদির সিকদারের ছেলে। তার  বাড়ির ৩ তলার ছাদে প্লাস্টিকের বেড়ায় বেষ্টিত এই কবুতরের খামার।

রুবেল সিকদার জানান, দেড় বছর আগে বন্ধুর দেওয়া ৫ জোড়া দিয়ে কবুতর শুরু করেন খামার। সেখান থেকে এখন একশ জোড়া। তবে এই দেড় বছরে বড় একটি ধাক্কা পার করছেন তিনি। যা কাটিয়ে উঠতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে তাকে। তার শখের খামারে বেশ কিছু কবুতর মারা যায়। সেখান থেকে পরিশ্রম ও মেধা দিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন তিনি। তবে শখের বসে কবুতর পালন করতে গিয়ে তিনি মনে করছেন এটা বাণিজ্যিকভাবে পালন করা জরুরি। আর সেই চিন্তা মাথায় রেখে সামনে এগোচ্ছেন তিনি। তার খামারে কবুতরের পাশাপাশি দেশি মুরগী, ছাগল ও বিদেশি জাতের গাভিও রয়েছে। 

তিনি আরো জানান, তার খামার দেখে প্রতিবেশী ও বন্ধু-বান্ধব কবুতর পালনে উদ্ধুদ্ধ হচ্ছেন। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকেও শখের খামারিরা তার খামার থেকে কবুতর কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। তার খামারে সর্বোচ্চ ৩০ হাজার ও সর্বনিম্ন ১ হাজার টাকা দামের বিভিন্ন জাতের কবুতর পাওয়া যায়। তার খামারে সিরাজী, চিলা, রেস, বুম্বাই, মিশরীয় বুম্বাই, পাকিস্তানী কিং, মিশরীয় মেগপাই, ডায়মন্ড কিং, বিউটি কিং, দেশিসহ বেশ কিছু জাতের কবুতর  রয়েছে। কবুতরের খামার পরিচর্চার জন্য দুইজনকে নিয়োগ দিয়েছেন তিনি।

রুবেল বলেন, ৫ জোড়া উপহারের কবুতরের জন্য প্রথমে ৩টি ছোট খাঁচা দিয়ে শুরু করি। এরপর প্রায় লাখ টাকা খরচ করে কবুতরের জন্য শেড তৈরি করি। এখন খামারে প্রায় সাড়ে ৩-৪ লাখ টাকার কবুতর রয়েছে। প্রতি মাসে কবুতরের খাবার ক্রয় করতে ১০-১২ হাজার টাকা লাগে। সব খরচ বাদে প্রতি মাসে আমার খামার থেকে প্রায় ৫০-৬০ হাজার টাকা আয় হয়।   

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ ইউসুফ হাবিব বলেন, রুবেল সিকদার একজন সফল উদ্যোক্তা। ৫ জোড়া কবুতর নিয়ে শুরু করে তার খামারে এখন একশ জোড়ার উপরে কবুতর রয়েছে। তাকে দেখে অনেক বেকার যুবক উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।

দৈনিক গাইবান্ধা
দৈনিক গাইবান্ধা