পোরশায় ড্রাগন চাষে বছরে আয় কোটি টাকা
দৈনিক গাইবান্ধা
প্রকাশিত: ৭ ডিসেম্বর ২০২২

নওগাঁর সীমান্তবর্তী পোরশা উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের কাট-পুকুরিয়া গ্রামে ২৪ বিঘা জমিতে ড্রাগন ফলের বাগান করে তাক লাগিয়েছেন উদ্যোক্তা আব্দুর রহমান শাহ। তিনি উপজেলার নিতপুর ইউনিয়নের পোরশা গ্রামের বাসিন্দা। আব্দুর রহমান একটি মাদ্রাসার শিক্ষক। পাশাপাশি কৃষির সঙ্গেও জড়িত। এ বাগান থেকে এ বছর প্রায় ১ কোটি টাকার ফল বিক্রির আশা করছেন তিনি। এখানে কর্মসংস্থান হয়েছে ৪০ জন নারী-পুরুষের।
বাগানে গিয়ে দেখা গেছে, আম বাগানের মাঝখানে ২৪ বিঘা জমিতে ড্রাগন বাগান। প্রায় ৫ ফুট উচ্চতায় কংক্রিটের খুঁটির ওপর টায়ার (চাকা) পেঁচিয়ে ও চায়না (রড) পদ্ধতিতে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছে ড্রাগন ফলের গাছ। প্রতিটি গাছে ১৫-২০টি করে ফুল ধরেছে। ফুল থেকে ৪-৫টি করে কাঁচা, আধাপাকা ও পাকা ফল ঝুলে আছে। বাগানে কাজ করছিলেন নারী-পুরুষ মিলে ২৫-৩০ জন। কেউ গাছ থেকে ফল সংগ্রহ করছিলেন। কেউ কোদাল দিয়ে মাটি আগলা করছেন। কেউ বা ফল ওজন করে ব্যবসায়ীদের বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন। নারী শ্রমিকরা নিড়ানি দিয়ে ঘাস পরিষ্কার করছিলেন।
জানা গেছে, বছরের যে কোনো সময় ড্রাগন চারা রোপণ করা যায়। সব ধরনের মাটিতেই চাষযোগ্য। তবে এপ্রিল-সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চারা রোপণের উপযুক্ত সময়। ৩ মিটার পরপর গর্ত করে চারা রোপণ করতে হয়। কংক্রিট বা বাঁশের খুঁটিতে বেঁধে দিতে হয়। গাছের বয়স ১ থেকে দেড় বছর হলে ফুল আসে। ফুল আসার ৩০-৩৫ দিনের মধ্যে ফল ধরে। প্রতিটি ফলের ওজন ২০০-৪০০ গ্রাম পর্যন্ত হয়। উঁচু মাটিতে ভালো ফলন হয়। একটি ড্রাগন গাছ পরিপক্ক হতে ৩-৪ বছর সময় লাগে। পরিপক্ক প্রতিটি গ্রাছে ৩০-৪০টি ফল ধরে। ড্রাগন চাষে পরিশ্রম বেশি। তবে অন্য ফল-ফসলের চেয়ে লাভজনক বলে মনে হয়।
জেলার চাহিদা মিটিয়ে এখন দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হচ্ছে। আব্দুর রহমান শাহের বাগান দেখে অনেকেই ড্রাগন চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। কৃষি বিভাগের পরামর্শ এবং ড্রাগন ফল চাষ অব্যাহত থাকলে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশেও রপ্তানির সম্ভাবনা দেখছেন উদ্যোক্তারা।
নারী শ্রমিক আদরি পাহান বলেন, ‘১২ জন নারী শ্রমিক আব্দুর রহমানের বাগানে কাজ করেন। সারাবছরই তারা কাজ করেন। ফলের মৌসুমে চাপ বেশি থাকায় ২৫০ টাকা এবং অন্য মৌসুমে ২০০ টাকা মজুরি পান। স্বামীর পাশাপাশি বাগানে কাজ করে বাড়তি আয় হয়।’
গোপালপুর গ্রামের শ্রমিক মুনছুর আলী, মামুনুর রশিদ ও লেলেঙ্গাহার গ্রামের মনোরঞ্জন পাহান বলেন, ‘৩ বছর ধরে বাগানে কাজ করছেন। আগাছা পরিষ্কার, সার ও কীটনাশক স্প্রে এবং পানি দেওয়ার কাজ করতে হয়। মজুরি পান দিনে ৩০০ টাকা। ফলের মৌসুমে বেশি শ্রমিক কাজ করে।’
নাটোর থেকে পরামর্শ নিতে আসা শাফিউল ইসলাম বলেন, ‘পড়াশোনা শেষ করে উদ্যোক্তা হতে চাই। বাগান দেখে খুবই ভালো লেগেছে। আমার কাছে খুবই লাভজনক মনে হয়েছে।’
বাগানের ম্যানেজার শাহ জামাল বলেন, ‘প্রথমে ৮ বিঘা জমিতে ৮ হাজার চারা দিয়ে শুরু করা হয়। জমিতে চারা রোপণের ৭ মাস পর ২-১টা করে ফুল আসে। গাছের বয়স ১ বছর হলে বিক্রি শুরু হয়। দ্বিতীয় বছরে বেশি ফল আসে। বিঘায় প্রায় ১ লাখ টাকার মতো ফল বিক্রি হয়। পরের বছর আরও ১৬ বিঘায় চারা রোপণ করা হয়। মোট ২৪ বিঘা জমিতে ড্রাগন ফলের বাগান।’
তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ১০-১৫ দিন পরপর ২০ মণ করে প্রায় ২০০ মণ ফল উঠানো হয়। পাইকারি দরে প্রকারভেদে ২০০-২৫০ টাকা কেজি হিসেবে বিক্রি হয়। ৭ মাস ফল পাওয়া যায়। আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত ফল সংগ্রহ হবে। এ বছর বাগান থেকে প্রায় কোটি টাকার মতো ফল বিক্রি হবে। ফলের মৌসুমে খরচ হবে মাসে প্রায় ২ লাখ টাকা। এছাড়া বাকি সময় সার, ওষুধ, শ্রমিক ও পরিচর্যায় খরচ হবে প্রায় ৫০ হাজার টাকা করে। সে হিসেবে মাসে প্রায় আড়াই লাখ টাকা করে বছরে খরচ ৩০ লাখ টাকা।’
বাগান মালিক আব্দুর রহমান শাহ বলেন, ‘২০১৭-২০১৮ সালে আমের দাম কম থাকায় গাছ কেটে ফেলা হয়। এরপর সেখানে বরই বাগান করার পরিকল্পনা ছিল। পরে নওগাঁ শহরের বন্ধু মাহাবুবের সঙ্গে আলোচনা করি। তিনি ড্রাগন চাষের পরামর্শ দিলেন। পরে যশোর থেকে ২০১৮-২০১৯ সালে প্রতিটি ড্রাগন চারা ৩০-৩৫ টাকা পিস হিসেবে কিনে আনি। ২৪ বিঘা জমিতে প্রায় ৪৫ হাজার পিস ড্রাগন চারা লাগানো হয়। প্রথম বছর প্রায় ৪০ লাখ টাকা খরচ হয়েছিল। এখন বাগান থেকে বছরে প্রায় দেড় কোটি টাকা আয় করা সম্ভব।’
তিনি বলেন, ‘বাবার কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা বিঘা হিসেবে জমিগুলো ইজারা নেওয়া হয়েছে। এজন্য টাকাও কম লেগেছে। এখন ড্রাগন চাষ সারাদেশেই হচ্ছে। উদ্যোক্তার সংখ্যা বেড়েছে। লাভের পরিমাণও কমে এসেছে। উৎপাদন বেশি হলে দামও কমে আসবে। সামনে আরও বাগান হবে। দাম ভালো না পেলে নতুন উদ্যোক্তারা আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। সরকার যদি উদ্যোক্তাদের সুযোগ-সুবিধা দেয়, তাহলে রপ্তানি করা সম্ভব।’
কাট-পুকুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা শহিদুল ইসলামও ড্রাগন চাষ শুরু করেছেন। তিনি বলেন, ‘গত দু’বছর আগে বাড়ির পাশে ৪০ শতাংশ জমিতে ড্রাগন চারা লাগিয়েছি। গাছে ফল আসা শুরু হয়েছে। আশা করছি লাভবান হওয়া যাবে। বরেন্দ্র এলাকায় পানি স্বল্পতার কারণে ধানের আবাদ ভালো না হওয়ায় এখন সবাই ফলের বাগানের দিকে ঝুঁকছেন।’
উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়ন ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. সামিরুল ইসলাম বলেন, ‘বাগানের বয়স প্রায় ৪ বছর। বাগান মালিককে বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছি। জৈব সার ব্যবহারে বেশি পরামর্শ দেওয়া হয়। এ ছাড়া সামান্য পরিমাণ রাসায়নিক সারও ব্যবহার করা হয়। এ উপজেলার ড্রাগন ফল সুমিষ্ট। ১ বিঘা জমিতে ১২০-১৪০ পিস ড্রাগন গাছ থেকে হেক্টরপ্রতি ৩০ টন ফল উৎপাদনের সম্ভাবনা আছে।’
তিনি বলেন, ‘গাছে ফল আসার ১০-১৫ দিন পর ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে হবে। না হলে ফুল ও ফল ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ড্রাগনে রোগ-বালাই খুবই কম। খরা মৌসুমে পরিমিত সেচ দিতে হবে। যারা ড্রাগন বা যে কোনো ফল চাষে আগ্রহী; তারা বাগান মালিকের কাছ থেকে বা কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ নিয়ে শুরু করবেন। না হলে মুখ থুবড়ে পড়ে আগ্রহ হারিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।’

- ডিজিটাল মেলায় সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন প্রদর্শন
- বিবিএক্স প্রতিবেদন: ব্যবসায় উন্নয়ন সূচকে বাংলাদেশের উন্নতি
- শেষ হলো ৩ দিন ব্যাপী জেলা প্রশাসক সম্মেলন
- ১ বছরে রপ্তানি আয় বেড়েছে দেড় লাখ কোটি টাকা
- ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলা উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
- সাঘাটায় প্রকল্প অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত
- গাইবান্ধায় উগ্রবাদ প্রতিরোধে আইনশৃঙ্খলা বাহীনির সেমিনার অনুষ্ঠিত
- গোবিন্দগঞ্জে শেখ কামাল আন্তঃস্কুল ও মাদ্রাসা এ্যাথলেটিকস অনুষ্ঠিত
- বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার পেলেন ১৫ জন
- বন্দিদের ভিডিও কলে কথা বলার সুযোগ দিতে চায় প্রশাসন
- ৬৫ বছরের পরও পাওয়া যাবে ১০ বছরমেয়াদি পাসপোর্ট
- সাকার মাছকে নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি
- দেশের প্রত্যেক জেলায় সংযোগ হবে রেলপথ
- রেকর্ড খাদ্য মজুত
- দেশব্যাপী সরকারিভাবে হবে জাকাত সংগ্রহ-বিতরণ
- অপার বিস্ময়ের মডেল মসজিদ
- বাংলাদেশ-দক্ষিণ কোরিয়া বাণিজ্যে নতুন রেকর্ড
- মেট্রোরেলের পল্লবী স্টেশন চালু
- সব শিশুকে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে চায় সরকার- প্রধানমন্ত্রী
- ব্যর্থতা খুঁজে বের করে দিন, সংশোধন করে নেব: প্রধানমন্ত্রী
- ইতিহাস বিকৃতিকারী কাকে রেখে কার বিচার করব, প্রশ্ন প্রধানমন্ত্রীর
- ভয়ঙ্কর তেঁতুলতলা, শতবর্ষী তেঁতুল গাছের ডাল ভাঙলেই অমঙ্গল!
- ফোনসহ যেকোনো ইলেকট্রিক যন্ত্রপাতি অকেজো হলে যা করবেন
- ছেলেদের যেসব অভ্যাসে মেয়েরা বেশি আকৃষ্ট হয়
- ছড়াচ্ছে ‘শ্বাসতন্ত্রের অসুস্থতা’, উত্তর কোরিয়ার রাজধানীতে লকডাউন
- ‘পাঠান’ দেখে যা বলছেন দর্শকরা
- পেরুকে হারালো আর্জেন্টিনা
- কোয়েলের ডিম বিক্রি করে আলমের বাজিমাত, মাসিক আয় আড়াই লাখ টাকা
- গোবিন্দগঞ্জে আওয়ামীলীগ সা. সম্পাদক বাদু`র শীতার্তদের উষ্ণ উপহার
- গাইবান্ধায় বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের ২১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন
- গাইবান্ধায় ডালের বড়ায় সংসার চলে অর্ধশত পরিবারের
- হামরা কম্বলটা পায়া একনা আরামে নিন্দ পাইরব্যার পামো!
- বাংলাদেশের পথরেখায় বিশ্বের দৃষ্টি
- গাইবান্ধার নামকরণ, ইতিহাস-ঐতিহ্যসহ নানা দর্শনীয় স্থান
- ফেরিওয়ালা থেকে বড় ব্যবসায়ী
- সাদুল্লাপুরে নতুন বইয়ের ঘ্রাণে উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থীরা
- গোবিন্দগঞ্জ বিএম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তির লটারী অনুষ্ঠিত
- জেলের বড়শিতে ৩৫ কেজির দুই কোরাল
- মিষ্টি আঙ্গুর চাষে সফল ঝিনাইদহের আব্দুর রশিদ
- গাইবান্ধায় মিতুর কারখানায় কাজ করে ৬০০ নারী স্বাবলম্বী
- পদ্মার এক বাঘাইড় বিক্রি হলো সাড়ে ৩১ হাজারে
- চোখ ধাঁধানো উদ্বোধনের অপেক্ষা
- ৫ লাখ টাকা খরচে ৬ লাখ টাকার কুল বিক্রি!
- শীতে ওয়াটার হিটার ব্যবহার করছেন? সতর্ক থাকবেন যেভাবে
- গ্রামটির প্রতি ঘরেই চলে রঙিন সুতার খেলা
- হলুদ ফুলে ছুয়েছে মাঠ সুন্দরগঞ্জে সরিষার বাম্পার ফলনের আশায় কৃষক
- হাইব্রিড বেগুন চাষে সফল জুলফিকার, বিঘাপ্রতি ফলন ২০ মণ!
- পলাশবাড়ীতে গ্রামীণ ঐতিহ্যের ঘোড়ার দৌড় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত
- কমলা চাষে সফল মান্দার হাজী খয়বর রওশন আলম
- ডালিম চাষে হারুনের লাখ টাকা আয়ের আশা!
