মঙ্গলবার   ১৯ মার্চ ২০২৪ || ৪ চৈত্র ১৪৩০

প্রকাশিত: ১১:৪৫, ২৬ নভেম্বর ২০২২

মুরাদনগরের সিদল বিক্রিতে স্বাবলম্বী রবীন্দ্র চন্দ্র

মুরাদনগরের সিদল বিক্রিতে স্বাবলম্বী রবীন্দ্র চন্দ্র

ভর্তা তৈরিতে সিদল একটি অন্যতম উপাদান। সিদলের ভর্তা কিংবা লতি তরকারি খায়নি এমন বাঙালি খুব কমই পাওয়া যাবে। বহুকাল থেকে এ সিদল তৈরি হয় কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার সলফা গ্রামে। তাদের তৈরি সিদল ভারতেও যায়। 

বর্তমানে সলফা গ্রামের চারটি পরিবার তাদের বাপ-দাদার আদি এ পেশাকে ধরে রেখেছে। এক সময় ঐ গ্রামের ৪০টি পরিবার সিদল তৈরির কাজ করতো। তারা এখন আর সে পেশায় নেই। পেশা বদলে চলে গেছেন অন্য পেশায়।

সরেজমিনে দেখা যায়, মাচায় সিদল শুকানোর কাজ করছেন রবীন্দ্র চন্দ্র ও বিষ্ণু চন্দ্র সরকার। তারা সিদল তৈরির বিভিন্ন কাজ করছেন। 

তারা জানান, দুই জাতের সিদল তৈরি করেন তারা। একটি হচ্ছে পোয়া অন্যটি পুঁটি সিদল। পোয়া মাছ চট্টগ্রাম থেকে সংগ্রহ করেন তারা। পুঁটি মাছ মেঘনা ও সিলেট এলাকা থেকে আনেন। পুঁটি মাছ আনার পর এগুলোর পেট কাটতে হয়। এলাকার প্রায় ১০০ নারী এ কাজ করেন। তারা মাছের পেট কেটে নিয়ে জাল দিয়ে তেল ওঠান। ওই তেল নারীদের কাছ থেকে ১৫০ টাকা কেজি দরে কিনে রাখেন রবীন্দ্র চন্দ্র ও বিষ্ণু চন্দ্র সরকার। এরপর মাছগুলো মাচায় শুকানোর কাজ চলে। মাছ শুকানোর এক মাস পর মটকার ভেতর ঢুকানো হয়। তখন ঐ তেল ব্যবহার করা হয়। এ বছর ৪০০ থেকে ৫০০ মটকা সিদল হবে তাদের। পৌষ-মাঘ মাসে মটকাগুলো মাটির নিচে গর্ত করে তিন মাস পুঁতে রাখার পর তৈরি হয় সিদল। প্রতি বছর আশ্বিন,কার্তিক মাস থেকে চৈত্র মাস পর্যন্ত চলে এ কাজ।

রবীন্দ্র চন্দ্র সরকার বলেন, বংশ পরম্পরায় আমরা এ কাজ করে আসছি। এক সময় নদী-নালা, খাল-বিল, জলাশয় উন্মুক্ত থাকায় প্রচুর মাছ পাওয়া যেত। এখন আর এলাকায় মাছ পাওয়া যায়না। মাছ সব কিনে আনতে হয়। বাজারে সিদলের চাহিদা থাকলেও পুঁজির অভাবে বেশি তৈরি করতে পারি না।

তিনি আরো বলেন, এই মৌসুমে ১০০ মণ পুঁটি সিদল করছি। আমাদের সিদল ঢাকা, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, খাগড়াছড়ি, ফেনীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় যায়। এছাড়া ভারতের আগরতলা এবং তেল্লামুড়ায় আমাদের কিছু পাইকার আছে। তারা এসে সিদল নিয়ে যান। সঠিক পৃষ্ঠপোষকতা পেলে সিদল উৎপাদন করে এ শিল্প টিকিয়ে রাখা যাবে।

দৈনিক গাইবান্ধা

সর্বশেষ

জনপ্রিয়