মির্জাগঞ্জে অসময়ের তরমুজ চাষে কৃষকদের সাফল্য
পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে আধুনিক প্রযুক্তি সম্প্রসারণের মাধ্যমে মালচিং পদ্ধিতে বারি জাতের তরমুজ চাষ করে সফলতা পেয়েছে কৃষকরা। এই মৌসুমে মালচিং পদ্ধিতে তরমুজের ভালো ফলনে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। উৎপাদনের খরচের চেয়ে তিনগুণ লাভবান হওয়ায় নতুন করে তরমুজ চাষ করে কৃষকরা।
স্থানীয় কৃষি বিভাগ ও উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. আরাফাত হোসেনের ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় বীজগুলো সংগ্রহ করে কৃষকদের বিনামূল্যে দিয়েছেন এবং এ ব্যাপারে সার্বক্ষণিক সহযোগিতা করে যাচ্ছেন চাষিদের। কিসমত ছৈলাবুনিয়া গ্রামে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কৃষক সমির অধিকারী নিজ ক্ষেতে তরমুজ পরিচর্যার কাজে ব্যস্ত রয়েছেন। তরমুজের মাচার নিচে সারি সারি তরমুজ ঝুলে আছে। বালাই মুক্ত রাখতে তরমুজ বাগানে ফাঁদ বসানো হয়েছে।
কৃষক বলেন, উচ্চমূল্যের অফসিজন তরমুজ চাষ করেছি কৃষি বিভাগের সহযোগিতায়। এটি অতি উচ্চমূল্য অফসিজন তরমুজ, রোপনকৃত গাছ গুলোতে তরমুজ ধরতে শুরু করছে। আশা করি ৮-১০ দিনের মাথায় বাজারজাত করতে পারব। তরমুজ চাষে যে টাকা ব্যয় হয়েছে, তার চেয়ে দ্বিগুণ টাকা লাভ হবে। অল্প সময়ে ভালো ফলন হয়েছে। বর্তমান বাজারে তরমুজের দামও বেশ ভালো পাওয়া যাবে। প্রতি পিস ১০০ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি করা যাবে। অসময়ে বাজারে তরমুজের চাহিদাও রয়েছে। অফসিজন তরমুজ চাষ করে তারা অনেক খুশি ও লাভবান। এসব তরমুজ বাজারে তুলতে হয় না। বাগান থেকেই পাইকাররা কিনে নিয়ে যায়। ফলে বাড়তি খরচও লাগছে না।
ইউনিয়ন উপ-সহকারী কৃষি অফিসার বলেন, বর্ষাকালে তরমুজ চাষে কৃষকদের বীজ, পরামর্শ ও প্রয়োজনীয় কারিগরি সহযোগিতা দিয়ে আসছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ। বর্ষাকালের এই তরমুজ চাষ করতে কৃষকের যা খরচ হয় তার দ্বিগুণ টাকা বিক্রি করতে পারবে। অল্প পুঁজি ও অল্প সময়ে লাভ বেশি হওয়াতে খুশি চাষিরা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. আরাফাত হোসেন জানান, মির্জাগঞ্জে অসময়ের এই তরমুজের চাষ পদ্ধতি দিন দিন বাড়ছে। রোপনকৃত তরমুজের চাড়া বৃষ্টি থেকে রক্ষায় পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখতে হয়। কারণ বৃষ্টিতে চাড়া নষ্ট হয়ে যায়। কৃষকদের বারি তরমুজ- ১ ও ২, ছিয়াথাই বীজ কোম্পানির, এফওয়ান হাইব্রীড বীজ ময়না, ব্ল্যাক বেবি, বারোমাসি হাইব্রীড তরমুজ কানিয়া (যার ভিতরে একেবারে হলুদ), হাইব্রীড রক মেলন, বারোমাসি হাইব্রীড মিলন রিয়া জাতের তরমুজরে বীজ কৃষদের বিনামূল্যে কৃষকদের দেয়া হয়েছে। এ সব উন্নত জাতের বীজ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে সংগ্রহ করে কৃষকদের অফসিজন তরমুজ চাষে উদ্বুদ্ধ করা এবং কৃষকরা চাষ করে সফলও হয়েছেন। তরমুজ ভিটামিন ও খনিজ উপাদান সমৃদ্ধ। অর্থনৈতিক ভাবে বেকার যুবক ও কৃষককে স্বাবলম্বী করে তুলতে তরমুজ চাষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
দৈনিক গাইবান্ধা