শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ || ৫ বৈশাখ ১৪৩১

প্রকাশিত: ০৯:৪৮, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১

সাঘাটায় কৃষকের মাল্টা চাষে সফতা

সাঘাটায় কৃষকের মাল্টা চাষে সফতা

সবজি চাষ করে নিজ প্রচেষ্টায় শূন্য থেকে কোটিপতি হয়েছেন সাঘাটা উপজেলার মুক্তিনগর ইউনিয়নের পুটিমারী গ্রামের কৃষক আমীর হোসেন। দৃঢ় বিশ্বাস আর একান্ত প্রচেষ্টায় মাত্র ৬ শতাংশ জমিতে সবজি চাষ শুরু করে কোটি টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন তিনি।

এমন সফলতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পদকসহ তিনি পেয়েছেন একাধিক পুরস্কার ও সম্মাননা। সবজির পাশাপাশি মাল্টা চাষে সফতলার পর এখন তিনি উচ্চ ফলনশীল পেয়ারা চাষেও দেখছেন সম্ভাবনার আলো।

জানা যায়, সাঘাটা উপজেলার মুক্তিনগর ইউনিয়নের পুটিমারী গ্রামের কৃষক আমির হোসেন যখন ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র তখনই তার দিনমজুর বাবা মোজাহার ব্যাপারী মারা যান। ফলে দরিদ্র পরিবারের সন্তান আমির হোসেন বাধ্য হয়ে লেখাপড়া ছেড়ে একটি হোটেলে শ্রমিকের কাজ নেন। কিন্তু তাতেও জুটত না দুই বেলার খাবার।

৫ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে ১৯৯৬ সালের শেষের দিকে পৈতৃক সূত্রে পাওয়া ৬ শতক জমিতে ১০০টি পেঁপের চারা লাগান আমির হোসেন। ওই জমিতেই সাথী ফসল হিসেবে চাষ করেন আদা। ছয় থেকে সাত মাসের চেষ্টায় পেঁপে ও আদা বিক্রি করে তার আয় হয় ১৫ হাজার টাকা। এভাবে শুরু হয় বিভিন্ন সবজি চাষ।
বছর খানেক চলার পর সবজি বিক্রির টাকা জমিয়ে এক বিঘা জমি বর্গা নেন। সেখানেও একই পদ্ধতিতে চাষাবাদ করেন তিনি। অক্লান্ত পরিশ্রম ও মেধা খাটিয়ে সফল চাষি হিসেবে জমি কিনতে শুরু করেন। এভাবেই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন তিনি।

বর্তমানে প্রতি বছর উৎপাদন খরচ বাদে তার আয় হয় ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা। তার কৃষি কাজে সহযোগিতা করেন স্ত্রী করিমন বেগম। আমীর হোসেনের এক ছেলে ও দুই মেয়ে। সবার বড় ছেলে আয়নুর রহমান স্নাতক পাসের পর বর্তমানে গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডে কর্মরত। বড় মেয়ে লিপি বেগম এইচএসসি পর্যন্ত পড়ার পর বিয়ে হয়েছে। ছোট মেয়ে আরাফা আক্তার এ বছর বগুড়ায় স্নাতকে অধ্যায়নরত। সন্তানদের লেখাপড়া ও সংসারের সব খরচ আসে ফল ও সবজি বিক্রির টাকা থেকেই।

সফলতার কথা বর্ণনা করতে গিয়ে আমির হোসেন বলেন, বর্তমানে আমি দুই বিঘা জমিতে মাল্টা, এক বিঘা জমিতে কলা, ১০ শতক জমিতে গেন্ডারী আখ, ৫ শতক জমিতে নবরত্ন কচু, ১০ শতক জমিতে লেবু, ৪০ শতক জমিতে গোল আলু ও এক বিঘা জমিতে শিম চাষ করেছি। এসব জমিতে সাথী ফসল হিসেবে হলুদ, আদা, কচু, টমেটো ও মিস্টি কুমড়া চাষ করেছি। একটি জমিতে একাধিক ফসলেই কৃষকরা দেখতে পারবে সফলতার মুখ।

সাঘাটা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ সাদেকুজ্জামান বলেন, আমির হোসেন কৃষিক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য পেয়েছেন বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার। ২০১৭ সালের ১৬ জুলাই ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তার হাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুরস্কার তুলে দেন। আমরা নিয়মিত কৃষি বিভাগ থেকে আমির হোসেনের ফল ও ফসলখেত পরির্দশনসহ প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে আসছি।

গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মোঃ মাসুদুর রহমান বলেন, একটি জমিতে একাধিক ফসল উৎপাদন করে কৃষক আমির হোসেন সফলতা এনেছেন। পেয়েছেন একাধিক পুরস্কারও। এখন ফল চাষের দিকে ঝুঁকছেন। তিনি মালটা চাষে সফতলার পরে তিনি পেয়ারা চাষ শুরু করেছেন। তার ফসল উৎপাদনে পরামর্শ ও সহযোগিতা অব্যাহত আছে।

দৈনিক গাইবান্ধা

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

সর্বশেষ

শিরোনাম

ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ভাতা বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপনদেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীরঈদে বেড়েছে রেমিট্যান্স, ফের ২০ বিলিয়ন ডলারের ওপরে রিজার্ভ১৪ কিলোমিটার আলপনা বিশ্বরেকর্ডের আশায়তাপপ্রবাহ বাড়বে, পহেলা বৈশাখে তাপমাত্রা উঠতে পারে ৪০ ডিগ্রিতেনেইমারের বাবার দেনা পরিশোধ করলেন আলভেজ‘ডিজিটাল ডিটক্স’ কী? কীভাবে করবেন?বান্দরবানে পর্যটক ভ্রমণে দেয়া নির্দেশনা চারটি স্থগিতআয়ারল্যান্ডের সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রীকে শেখ হাসিনার অভিনন্দনজুমার দিনে যেসব কাজ ভুলেও করতে নেইগোবিন্দগঞ্জে কাজী রাশিদা শিশু পার্কের উদ্বোধনইউরোপের চার দেশে বাংলাদেশি শ্রমিক নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু