বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪ || ১৩ চৈত্র ১৪৩০

প্রকাশিত: ১২:১১, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০

সাইবার বুলিং ও আমাদের করণীয়

সাইবার বুলিং ও আমাদের করণীয়

সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে এখন নানা ধরনের বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন নেটিজেনরা। ফেসবুক, ম্যাসেঞ্জার, টুইটার, ভাইবার, হোয়াটসঅ্যাপ ইত্যাদির মাধ্যমে তারা সাইবার অপরাধীদের শিকারে পরিণত হচ্ছেন। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সাইবার বুলিং। নারীরা ও শিশুরা এর প্রধান শিকার।

ভার্চুয়াল প্ল্যাটফরমে কারো ব্যক্তিগত দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে হেয় প্রতিপন্ন করা, ভয় দেখানো বা মানসিক নির্যাতন বা অন্যায় কোনো কিছুতে প্রলুব্ধ করা ইত্যাদি হলো সাইবার বুলিং। কিশোর-কিশোরীরাই প্রথম দিকে এ ধরনের হয়রানির শিকার হচ্ছিল। এখন মধ্যবয়সীরাও এ ফাঁদে পা দিচ্ছেন।

বাংলাদেশে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীসহ ফেসবুক ব্যবহারকারীদের একটি বড় অংশ সাইবার বুলিংয়ের শিকার। তথ্য বলছে দেশের ৪৯ শতাংশ স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থী সাইবার বুলিংয়ের নিয়মিত শিকার। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের হিসাব মতে, দেশের তিন-চতুর্থাংশ নারীই সাইবার বুলিংয়ের শিকার।

তবে এ বিষয়টি অপ্রকাশিতই থেকে যায়। মাত্র ২৬ শতাংশ অনলাইনে নির্যাতনের বিষয়টি প্রকাশ করে অভিযোগ দায়ের করেন। বাকিরা ভয়ে থাকেন অভিযোগ করলেই তাদের সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন হতে হবে।

সাইবার বুলিং ছাড়াও মোবাইল ফোন বা ই-মেইলেও এ ধরনের নির্যাতনের ঘটনা অহরহ ঘটছে। এসবে ফলে নারীদের মধ্যে প্রচণ্ড হতাশা, পড়াশোনায় অমনোযোগিতা, অনিদ্রা ইত্যাদি নানা সমস্যার সৃষ্টি হয়। এমনকি আত্মহননের ঘটনাও ঘটতে পারে।

সতর্ক থাকবেন যেভাবে

সাইবার বুলিংয়ে চুপ থাকার নীতিই বড় ক্ষতির অন্যতম কারণ। পরিবারের কথা ভেবে কিংবা সম্মান হারােনোর ভয়ে অনেকেই সব ‘চুপচাপ’ সয়ে যান কিংবা চেপে যান।অপরাধীরা এর ফলে আরো বেশি সুযোগ নেয়। তারা আর্থিক সুবিধা আদায় করতে করতে একসময় ভিকটিমকে যৌন নির্যাতনের ফাঁদেও ফেলে।

বাবা-মা যদি সহজেই সন্তানের বন্ধু হতে পারেন তাহলে এ সংকট নস্যি। সাইবার বুলিং কী, ভার্চুয়াল জগতের পরিচিতরা কেন অনিরাপদ এবং একান্ত ব্যক্তিগত তথ্য কেন সবার সঙ্গে শেয়ার করা যাবে না- এগুলো সন্তানদের বুঝিয়ে বলতে হবে। ভার্চুয়াল জগতে সন্তান কোন মাঠে খেলছে সেদিকে নজর দিতে হবে তারই সঙ্গী হয়ে। এর জন্য গণসচেতনতা তৈরিরও বিকপ্ল নেই।

আইনি সহায়তা

যদি বিষয়টি পারিবারিক গণ্ডির বাইরে চলে যায়। তবে আইনের আশ্রয় নিতেই হবে। এক্ষেত্রে ‘পুলিশি ঝামেলা’ এড়িয়ে চললেই বরং বিপদ। আর তা আপনাকে বিপথেই পরিচালিত করবে। কিছু ধাপ অনুসরণ করলে এই কঠিন কাজই খুব সহজ হয়ে যায়।

এর মধ্যে প্রথম কাজ হচ্ছে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা। তবে পরিবারের সদস্যদের সহযোগিতায় না নিয়ে একা একা থানায় যাওয়াটাও বোকামি। সঙ্গে রাখতে হবে হয়রানির প্রমাণও। স্ক্রিন শট কিংবা মেসেজ।

হয়রানির শিকার যে কেউ এখন ৯৯৯ অথবা পুলিশের ফেসবুকে পেজে নক করলেও সহায়তা পাবেন। এ ছাড়া মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হটলাইন ১০৯২১ নম্বরে গোপনীয়তা রক্ষা করে এ ধরনের সমস্যার সমাধান করা হয়। সরাসরি বিটিআরসি’র ফোনে ও ই-মেইলেও অভিযোগ করা যায়। বিড়ম্বনার শিকার যে অনলাইন জগতে সেই জগতেই এর সুরাহা সন্ধানেরও পথের দিশা পাওয়া যাবে।

দৈনিক গাইবান্ধা

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

সর্বশেষ