সন্ত্রাস ও নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে ভূমিকা রাখবে মডেল মসজিদ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মডেল মসজিদ ও ইসলামী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রগুলো ইসলামের প্রচার ও প্রসারে ভূমিকা রাখার পাশাপাশি সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ ও নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে জনসচেতনতা বাড়াতে ভূমিকা রাখবে।
বৃহস্পতিবার মুজিববর্ষ উপলক্ষে ৫৬০টি মডেল মসজিদের মধ্যে প্রথম পর্যায়ে ৫০টি মডেল মসজিদের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ধর্মের নামে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস সৃষ্টি ও মানুষ হত্যা আমাদের ধর্মের ইমেজ নষ্ট করছে। ওলামা একরামদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, এই পথ সর্বনাশা পথ। এই পথ থেকে দেশের যুব সমাজকে রক্ষা করতে হবে। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও মানুষ হত্যা করে কেউ বেহেশতে যাবে না।
তিনি বলেন, সামাজিক কমিটি করে যুব সমাজকে মাদক, সন্ত্রাস, নারী ও শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে মানুষকে সোচ্চার করে তুলতে হবে। মাদক সমাজকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আজকে আমি সত্যিই খুব আনন্দিত। মডেল মসজিদগুলো হতে ইসলামের সঠিক মর্মবাণী প্রচার হবে, ইসলামের সঠিক প্রচার হবে। ইসলামের সঠিক জ্ঞান চর্চা হবে। জ্ঞান বিজ্ঞান চর্চায় মুসলমানরা আরো এগিয়ে যাবে। ধর্ম সম্পর্কে মানুষ যেন সচেতন হয় আমরা তা চাই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ক্ষমতায় এসে হজ যাত্রীদের যাতে কোনো সমস্যা না হয় সে ব্যবস্থা নিয়েছি। যখনই আমি হজে যাই আমাদের হজ যাত্রীদের খোঁজখবর নেই। সৌদি আরবের সরকারের সঙ্গে কথা বলে সেগুলো সমাধানও করি। এখন আর হজ যাত্রীদের ভোগান্তি পোহাতে হয় না।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউসের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান, ধর্মসচিব মো. নূরুল ইসলাম ও তিন স্পট থেকে কয়েকজন মুসল্লি প্রমুখ।
রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে গণভবনের সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান বলেন, মুসলিম বিশ্বের এই প্রথম কোনো দেশের সরকারপ্রধান একসঙ্গে ৫৬০টি মসজিদ নির্মাণ করছেন। এর আগে কোনো মুসলিম শাসক বা সরকারপ্রধান একসঙ্গে এতগুলো মসজিদ নির্মাণ করেননি। এটি একটি অনন্য এবং যুগান্তকারী ঘটনা।
একসঙ্গে এতগুলো মসজিদ নির্মাণের যুগান্তকারী উদ্যোগ গ্রহণের জন্য ধর্ম প্রতিমন্ত্রী দেশবাসীর পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে উন্নত মসজিদ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণে নিজস্ব অর্থায়নে ৮ হাজার ৭২২ কোটি টাকা ব্যয়ে মডেল মসজিদ ও সংস্কৃতি কেন্দ্রগুলো নির্মাণ করছে সরকার।
আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত সুবিশাল এসব মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্সে নারী ও পুরুষদের পৃথক অজু ও নামাজ আদায়ের সুবিধা, লাইব্রেরি, গবেষণা কেন্দ্র, ইসলামিক বই বিক্রয় কেন্দ্র, পবিত্র কুরআন হেফজ বিভাগ, শিশু শিক্ষা, অতিথিশালা, বিদেশি পর্যটকদের আবাসন, মৃতদেহ গোসলের ব্যবস্থা, হজ যাত্রীদের নিবন্ধন ও প্রশিক্ষণ, ইমামদের প্রশিক্ষণ, অটিজম কেন্দ্র, গণশিক্ষা কেন্দ্র, ইসলামী সংস্কৃতি কেন্দ্র থাকবে। এছাড়া ইমাম-মুয়াজ্জিনের আবাসনসহ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য অফিসের ব্যবস্থা এবং গাড়ি পার্কিং সুবিধা রাখা হয়েছে।
দৈনিক গাইবান্ধা