শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ || ৬ বৈশাখ ১৪৩১

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ৬ মে ২০২১

রমজান যাদের কোনো উপকারেই আসে না

রমজান যাদের কোনো উপকারেই আসে না

সকল মাসের চেয়ে সেরা মাহে রমজান। আত্নশুদ্ধি আর গোহা মাফ করে নেয়ার সুবর্ণ সুযোগ এই মাসে পান মুমিনরা। আল্লহ তায়ালার নৈকট্য অর্জনের মাস। পবিত্র রমজান মুমিনের মুক্তির মাস।এই মাসে মহান আল্লাহ তার বান্দাদের পাপমুক্ত করেন। তাদের প্রতিটি আমলের সওয়াব বহুগুণে বাড়িয়ে দেন।

রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি এই মাসে একটি নফল কাজ করবে, সে যেন অন্য মাসের একটি ফরজ আদায় করল। আর যে ব্যক্তি এ মাসে একটি ফরজ আদায় করবে, সে যেন অন্য মাসের ৭০টি ফরজ সম্পাদন করল।’ (মিশকাতুল মাসাবিহ, হাদিস : ১৯৬৫)

এভাবেই মহান আল্লাহ তার মুমিন বান্দাদের জন্য অবারিত রহমত অর্জনের দ্বার খুলে দেন। অন্যদিকে মুনাফিকের জন্য এই মাসটি ক্ষতির মাস। কেননা তারা এই রমজান মাসেও নিজেকে পাপমুক্ত করার প্রতি উদ্যোগী না হয়ে মানুষের ক্ষতি করার পাঁয়তারায় লিপ্ত থাকে। মানুষের দোষচর্চায় লিপ্ত থাকে। অন্যকে কিভাবে ঘায়েল করা যায়, সেই কূটচাল তৈরিতে ব্যস্ত থাকে।

রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘আল্লাহর কসম! মুসলমানদের জন্য রমজানের চেয়ে উত্তম কোনো মাস আসেনি এবং মুনাফিকদের জন্য রমজান মাসের চেয়ে অধিক ক্ষতির মাসও আর আসেনি। কেননা মুমিনরা এ মাসে (সারা বছরের জন্য) ইবাদতের শক্তি ও পাথেয় সংগ্রহ করে আর মুনাফিকরা তাতে মানুষের উদাসীনতা ও দোষত্রুটি অন্বেষণ করে। এ মাস মুমিনের জন্য গনিমত আর মুনাফিকের জন্য ক্ষতির কারণ।’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ৮৩৬৮)

মানুষের দোষচর্চা ও দোষত্রুটি অন্বেষণে মগ্ন থাকা ইসলামের দৃষ্টিতে গর্হিত কাজ। তা ছাড়া এই অভ্যাস নিজের জন্যই দুর্ভোগ ডেকে আনে। মহান আল্লাহ তার বান্দাদের এর ভয়াবহতা সম্পর্কে সতর্ক করেছেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা একে অন্যের দোষত্রুটি অন্বেষণ কোরো না এবং পরস্পর গিবত কোরো না। তোমাদের মধ্যে কেউ কি তার মৃত ভাইয়ের গোশত ভক্ষণ করতে পছন্দ করবে? বস্তুত তোমরা তা ঘৃণাই করে থাকো। সুতরাং তোমরা আল্লাহকে ভয় করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ তাওবা কবুলকারী, পরম দয়ালু।’ (সুরা : হুজুরাত, আয়াত : ১২)

অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, পেছনে ও সামনে প্রত্যেক পরনিন্দাকারীর জন্য দুর্ভোগ-ধ্বংস। (সুরা : হুমাজাহ, আয়াত : ১) এই দুর্ভোগের মাত্রা কী হবে, সে ব্যাপারেও এই সুরায় ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘অবশ্যই সে নিক্ষিপ্ত হবে হুতামায়। আর...সেটি আল্লাহর প্রজ্বলিত আগুন, যা হৃদপিণ্ড পর্যন্ত পৌঁছে যাবে। নিশ্চয়ই তা তাদের আবদ্ধ করে রাখবে। প্রলম্বিত স্তম্ভসমূহে।’ (সুরা : হুমাজাহ, আয়াত : ৪-৯)

যারা পবিত্র রমজান মাসে এসেও এই জঘন্য কাজে লিপ্ত থাকে, তাদের চেয়ে দুর্ভাগা আর কে হতে পারে? পবিত্র রমজানের মতো মহামূল্যবান মাস পেয়েও যারা তার বরকত অর্জন করতে পারে না, নিজের গুনাহ মাফ করাতে পারে না, উপরন্তু অন্যের সমালোচনা ও অন্যের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে নিজেকে জাহান্নামের দিকে ঠেলে দেয়, সে সত্যি দুর্ভাগা। মহান আল্লাহ তার প্রিয় বান্দাদের এ ধরনের লোকদের থেকে দূরে থাকতে বলেছেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর তুমি আনুগত্য কোরো না প্রত্যেক এমন ব্যক্তির, যে অধিক কসমকারী, লাঞ্ছিত, পেছনে নিন্দাকারী ও যে চোগলখোরি করে বেড়ায়, ভালো কাজে বাধাদানকারী, সীমা লঙ্ঘনকারী, পাপিষ্ঠ।’ (সুরা : কলাম, আয়াত : ১০-১৩)

অনেকের মনে হতে পারে, আমি তো অমূলক কিছু নিয়ে কারো গিবত করছি না, সে আসলেই এ ধরনের পাপে লিপ্ত। তাদের জন্য রাসূল (সা.)-এর একটি হাদিস উদ্ধৃত করা হলো, এটি জানার পর তারা বুঝতে পারবে আসলে গিবত কাকে বলে। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, একদা রাসুল (সা.)-কে প্রশ্ন করা হলো, গিবত কী? তিনি বলেন, তোমার ভাইয়ের ব্যাপারে তোমার এমন কিছু বলা, যা শুনলে সে অসন্তুষ্ট হয়। পুনরায় প্রশ্ন করা হলো, আমি যা বলি, তা যদি আমার ভাইয়ের মধ্যে বিদ্যমান থাকে? তিনি বলেন, তুমি যা বলো, তা যদি তার মধ্যে থাকে, তাহলেই তুমি তার গিবত করলে। আর তুমি যা বলো, তা যদি তার মধ্যে না থাকে, তবে তুমি তাকে মিথ্যা অপবাদ দিলে। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৮৭৪)

দৈনিক গাইবান্ধা

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

সর্বশেষ

শিরোনাম

ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ভাতা বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপনদেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীরঈদে বেড়েছে রেমিট্যান্স, ফের ২০ বিলিয়ন ডলারের ওপরে রিজার্ভ১৪ কিলোমিটার আলপনা বিশ্বরেকর্ডের আশায়তাপপ্রবাহ বাড়বে, পহেলা বৈশাখে তাপমাত্রা উঠতে পারে ৪০ ডিগ্রিতেনেইমারের বাবার দেনা পরিশোধ করলেন আলভেজ‘ডিজিটাল ডিটক্স’ কী? কীভাবে করবেন?বান্দরবানে পর্যটক ভ্রমণে দেয়া নির্দেশনা চারটি স্থগিতআয়ারল্যান্ডের সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রীকে শেখ হাসিনার অভিনন্দনজুমার দিনে যেসব কাজ ভুলেও করতে নেইগোবিন্দগঞ্জে কাজী রাশিদা শিশু পার্কের উদ্বোধনইউরোপের চার দেশে বাংলাদেশি শ্রমিক নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু