মঙ্গলের মাটিতে পারসিভারেন্স
‘মঙ্গলগ্রহে মানুষ থাকে না...’ বাংলা ব্যান্ড চন্দ্রবিন্দুর এই লাইন নিছক মজার বশেই গাওয়া। কিন্তু মঙ্গলে প্রাণের অস্তিত্ব থাকা কতটা সম্ভব—এসব নিয়ে বিজ্ঞানীরা গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন নিরন্তর। নাসার ‘মার্স ২০২০’ মিশনটিও এরই নামান্তর। এ প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত ‘রোভার দ্য পারসিভারেন্স’ মঙ্গলের মাটি স্পর্শ করবে এবার।
মঙ্গলের উদ্দেশ্য পাঠানো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় মহাকাশ সংস্থা নাসার পঞ্চম রোভার এটি। দীর্ঘ সাড়ে ছয় মাস মহাশূন্যে ভ্রমণ শেষে বাংলাদেশ সময় ১৯ ফেব্রুয়ারি রাত (১৮ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাত) ১ টা ১৫ মিনিটে মঙ্গলের মাটি ছোঁবে এটি।
২০২০ সালের ৩০ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার কেপ কার্নিভাল এয়ার ফোর্স স্টেশন থেকে মঙ্গলের উদ্দেশ্য যাত্রা শুরু করে এ রোভার। নাসার এই মিশনটির মূল উদ্দেশ্য হল মঙ্গলে প্রাণের অস্তিত্ব খোঁজা। সেই নমুনাই সংগ্রহ করে পৃথিবীতে পাঠাবে এটি, কিন্তু তার জন্যে অপেক্ষা করতে হবে ২০২৬ সাল পর্যন্ত।
রোভার দ্য পারসিভারেন্স সিলড টিউবেও (বাতাস বা কোনো গ্যাস প্রবেশ করতে পারবে না এমন টিউব) নমুনা সংগ্রহ করে রাখবে। পরবর্তীকালে মানুষবাহী কোনো মিশন গেলে, সংগ্রহ করা যাবে সেটি। এই রোভারটিতে রয়েছে ২৩টি ক্যামেরা, ২টি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন মাইক্রোফোন যা মঙ্গলের বাতাসের শব্দকেও ধরে রাখতে পারবে।
‘মার্স ২০২০’ প্রকল্পের অন্যতম বিজ্ঞানী কেন উইলিফোর্ড বলেন, জীবনের চিহ্ন খোঁজার জন্য সবচেয়ে আদর্শ জায়গা হচ্ছে জেজেরো হ্রদ। আমি এমনটাই মনে করি। এর উপকূল কার্বন এবং নানা খনিজ পদার্থের সন্ধান মিলেছে। তাই এখানে জীবাশ্ম থাকার ভালো সম্ভাবনা রয়েছে।
এর আগে নাসা বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং তথ্য সংগ্রহের উদ্দেশ্যে মঙ্গলের বুকে আরও চারটি রোভার পাঠায়। যার প্রত্যেকটাই সফলভাবে মঙ্গলের বুকে অবতরণ করতে সক্ষম হয়। মানবসভ্যতার ইতিহাসে নাসার হাত ধরে নতুন কোন ‘মঙ্গল’-কাব্য রচিত হয় কি-না, তার দিকেই চোখ এখন সমস্ত বিশ্ববাসীর।
দৈনিক গাইবান্ধা