মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪ || ২ বৈশাখ ১৪৩১

প্রকাশিত: ১২:৩৪, ৯ জুলাই ২০২০

পাপুল কুয়েতের নাগরিক হলে সংসদ সদস্য পদ থাকবে না: প্রধানমন্ত্রী

পাপুল কুয়েতের নাগরিক হলে সংসদ সদস্য পদ থাকবে না: প্রধানমন্ত্রী

বুধবার জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। তিনি বলেন, “সে কুয়েতের নাগরিক কী না… সেটা কিন্তু কুয়েতের সাথে আমরা কথা বলছি, সেটা দেখব। আর যদি এটা হয়, তাহলে তার ওই সিট হয়ত খালি করিয়ে দিতে হবে। কারণ যেটা আইনে আছে সেটা হবে। তার বিরুদ্ধে আমরা এখানেও তদন্ত করছি।”

লক্ষ্মীপুর-২ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য পাপুলকে গত ৬ জুন রাতে কুয়েতের মুশরিফ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। মারাফি কুয়েতিয়া কোম্পানির অন্যতম মালিক পাপুলের সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি রয়েছে।

পাচারের শিকার পাঁচ বাংলাদেশির অভিযোগের ভিত্তিতে পাপুলের বিরুদ্ধে মানবপাচার, অর্থপাচার ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের শোষণের অভিযোগ এনেছে কুয়েতি প্রসিকিউশন।

সাধারণ শ্রমিক হিসাবে কুয়েত গিয়ে বিশাল সাম্রাজ্য গড়া পাপুল ২০১৮ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। শুধু তাই নয়, নিজের স্ত্রী সেলিনা ইসলামকেও সংরক্ষিত আসনে সংসদ সদস্য করে আনেন তিনি।

প্রবাসী উদ্যোক্তাদের প্রতিষ্ঠিত এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকেও পাপুলের বড় অঙ্কের শেয়ার রয়েছে। কুয়েতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর তাকে ওই ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।

পাপুল ও তার কোম্পানির ব্যাংক হিসাব ইতোমধ্যে জব্দ করেছে কুয়েত কর্তৃপক্ষ। বাংলাদেশেও তার বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ।

কাজী শহিদ ইসলাম পাপুল ও তার স্ত্রী সেলিনা ইসলাম। ফেইসবুক থেকে নেওয়া ছবি

সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে বুধবার বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ কুয়েতে পাপুলের গ্রেপ্তার হওয়ার প্রসঙ্গ তোলেন। গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরে তিনি এমপি পাপুলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ারও দাবি জানান।

তার প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সে (পাপুল) কিন্তু স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য। সে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে আমাদের (আওয়ামী লীগের) নমিনেশন চেয়েছিল, আমি দিইনি। কিন্তু সে স্বতন্ত্র ইলেকশন করেছে।

“ওই সিটটি আমরা জাতীয় পার্টিকে দিয়ে দিয়েছিলাম। জাতীয় পার্টির নোমান (মোহাম্মদ নোমান) নমিনেশন পেয়েছিলেন, কিন্তু নির্বাচন করেননি। সেখানে ওই লোক (পাপুল) জিতে আসেন। আবার তার ওয়াইফকেও যেভাবে হোক (সংরক্ষিত আসনের এমপি) বানায়। কাজেই এটা কিন্তু আমাদের করা না।”

বিএনপির সাংসদ হারুন তার বক্তব্যে রিজেন্ট হাসপাতালের ‘অনিয়ম ও দুর্নীতি’ এবং করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে ৫০ লাখ পরিবারকে সরকারের দেওয়া সহায়তার ক্ষেত্রে অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে আসা তথ্য তুলে ধরেন।

জবাবে সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেন, “যে তথ্যগুলো পত্রিকা লিখেছে, প্রত্যেকটা বিষয়… আপনি তিনটা বিষয় উল্লেখ করেছেন। তিনটি বিষয়েই কিন্তু ধরেছে আমাদের সরকারই। বিরোধীদলের সদস্যরা বলেননি, আমরাই ধরেছি।”

 প্রধানমন্ত্রী বলেন, পঞ্চাশ লাখ পরিবারকে সহায়তার জন্য তালিকা হয়েছে। সেই তালিকা তিন দফা যাচাই করা হচ্ছে।

“সেটা যাচাই বাছাই করে তারপর কিন্ত আমরা যথাযথ, মানে যে পাওয়ার যোগ্য, সরাসরি তার কাছে আমরা টাকাটা পৌঁছে দিচ্ছি। হয় তার মোবাইল ফোনের মাধ্যমে, না হয় তার অ্যাকাউন্টে। যাচাই করতে সময়ও নিয়েছি। এখানে অন্য যে নাম-ধাম আসছে সেগুলো আমরা কেটে ছেটে ফেলে দিচ্ছি।”

‘পাচারে কারা, দেখা দরকার’

মানব পাচারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মানুষকে ‘ভুলিয়ে ভালিয়ে সোনার হরিণের স্বপ্ন দেখিয়ে’ কারা বিদেশে নিয়ে যাচ্ছে, সেটা ‘ভালোভাবে দেখা দরকার’।

সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদের একটি সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এদিন সংসদে এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, যখনই এ ধরনের ঘটনা ঘটছে, সরকার তদন্ত করে সেইসব রিক্রুটিং এজেন্সিকে ধরছে, যথাযথ ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে।

“আমি মনে করি যে মাননীয় সংসদ সদস্য একটা সঠিক কথাই বলেছেন যে, এটা ভালোভাবে দেখা দরকার কারা এইভাবে ভুলিয়ে ভালিয়ে মানুষগুলোকে সেই সোনার হরিণের স্বপ্ন দেখিয়ে নিয়ে যায় আর তারপরে বিপদে ফেলে বা তাদের মৃত্যুবরণ করতে হয়। সেটা আসলে করা উচিত।”

সেই সঙ্গে দেশের মানুষকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “এত সুযোগ রয়েছে… প্রতিটি ইউনিয়ন পর্যায়ে আমাদের ডিজিটাল সেন্টার। তার মাধ্যমে তারা সেখানে নিজেরা নিবন্ধন করতে পারেন এবং সেই নিবন্ধন করার পর যখন যেখানে কাজের সুযোগ আসে, সাথে সাথে ওই নিবন্ধিতদের কিন্তু আমরা প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করি।”

নিবন্ধিত কর্মীরা যখন বৈধভাবে বিদেশে যায়, তখন তাদের চাকরির নিরাপত্তা, বেতনের নিরাপত্তা সবই থাকে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “দুর্ভাগ্য, তারপরও মানুষ এই ধরনের এজেন্টদের খপ্পরে পড়ে, দালালদের খপ্পরে পড়ে। তারপরে তারা লক্ষ লক্ষ টাকা দিয়ে গিয়ে একেবারে নিঃস্ব হয়ে যায়। ওরা নিয়ে গিয়ে কিন্তু আবার তাদেরকে জিম্মি করে, ওদের টর্চার করে, মারে, রেকর্ড শোনায়… আবার টাকা দাবি করে। তাদের আবার এজেন্ট থাকে, তারা টাকা নেয়।”

দেশবাসীকে এদের ব্যাপারে সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের প্রবাসে যারা কাজ করেন, আমাদের অর্থনীতিতে তাদের অবদান আছে। কাজেই সেই দিক থেকে আমরা তাদের গুরুত্ব দিই। এবং সেজন্য তাদের নিরাপত্তার তাগিদ আমাদের থাকে।”

দৈনিক গাইবান্ধা

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

সর্বশেষ

শিরোনাম

ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ভাতা বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপনদেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীরঈদে বেড়েছে রেমিট্যান্স, ফের ২০ বিলিয়ন ডলারের ওপরে রিজার্ভ১৪ কিলোমিটার আলপনা বিশ্বরেকর্ডের আশায়তাপপ্রবাহ বাড়বে, পহেলা বৈশাখে তাপমাত্রা উঠতে পারে ৪০ ডিগ্রিতেনেইমারের বাবার দেনা পরিশোধ করলেন আলভেজ‘ডিজিটাল ডিটক্স’ কী? কীভাবে করবেন?বান্দরবানে পর্যটক ভ্রমণে দেয়া নির্দেশনা চারটি স্থগিতআয়ারল্যান্ডের সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রীকে শেখ হাসিনার অভিনন্দনসুইজারল্যান্ডে স্কলারশিপ পাওয়ার উপায় কিবৈসাবি উৎসবের আমেজে ভাসছে ৩ পার্বত্য জেলাসবাই ঈদের নামাজে গেলে শাহনাজের ঘরে ঢুকে প্রেমিক রাজু, অতঃপর...