বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ || ১১ বৈশাখ ১৪৩১

প্রকাশিত: ১২:৩৭, ২৩ এপ্রিল ২০২১

গাইবান্ধার চরাঞ্চলে নাব্য সংকটে পণ্য পরিবহনে ঘোড়ার গাড়িই ভরসা

গাইবান্ধার চরাঞ্চলে নাব্য সংকটে পণ্য পরিবহনে ঘোড়ার গাড়িই ভরসা

তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র এবং যমুনা নদী বেষ্টিত চরাঞ্চলের গ্রামগুলোতে শুকনো মৌসুমে নদ-নদীর পানি শুন্যতায় বিশাল এলাকাজুড়ে থাকে শুধু-ই ধু-ধু বালুচর। এ সময় জেলার নদীবেষ্টিত সুন্দরগঞ্জ, গাইবান্ধা, সাঘাটা ও ফুলছড়ি উপজেলার ২২টি ইউনিয়নের প্রায় দেড় শতাধিক চরাঞ্চলে বসবাসকারী মানুষদের যাতায়াত ও কৃষি পণ্যসহ প্রয়োজনীয় মালামাল পরিবহনে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। চরাঞ্চলের যাতায়াত ব্যবস্থা নিয়ে এ অঞ্চলে একটি কথা প্রচলিত আছে আর তা হচ্ছে ‘চরে যাতায়াতে পাও, না হয় নাও’। অর্থাৎ বর্ষায় নৌকা আর শুকনো মৌসুমে পায়ে হাঁটা। এছাড়া কোন বিকল্প নেই।

এ কারণে পরিবহনের সুবিধা না থাকায় এবং তা অত্যন্ত ব্যয়বহুল হওয়ার কারণে চরাঞ্চলের কৃষিজীবী মানুষ তাদের উৎপাদিত কৃষি পণ্য, গরু-মহিষের দুধের সঠিক মূল্য পাওয়া থেকে বঞ্চিত হতো। ফলে উর্বর চরাঞ্চলের নদীবাহিত পলি মাটিতে বিপুল পরিমাণ ফসল ফলিয়েও তাদের উৎপাদন ব্যয় মিটিয়ে তা থেকে প্রকৃত লাভ ঘরে তুলতে পারতো না। এতে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতো কৃষকরা। ফলশ্রুতিতে কৃষি নির্ভর শ্রমজীবী মানুষ তাদের কর্মসংস্থান থেকে বঞ্চিত হয়ে অতিকষ্টে জীবনযাপন করতে বাধ্য হতো। জীবন-জীবিকার তাগিদে চরাঞ্চলের শ্রমজীবী মানুষকে কর্মসংস্থানের জন্য জেলার বাইরের ছুটতে হতো।

কিন্তু এখন অবস্থা ভিন্ন। শুকনো মৌসুমে যাতায়াতের দুর্ভোগ কমাতে ব্যবহৃত হচ্ছে ‘ঘোড়ার গাড়ী’। যা পরিবহনের ক্ষেত্রে সুযোগ সৃষ্টির পাশাপাশি চরাঞ্চলের গ্রামীণ অর্থনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয়েছে। এই ঘোড়ার গাড়িগুলো মূলত: চালানো হয় একটি ঘোড়া দিয়ে। যে কারণে এ ধরণের গাড়িতে মালামাল পরিবহনের ব্যয়ও সঙ্গত কারণেই যথেষ্ট কম। এছাড়া গাড়ি তৈরির উপকরণ খুব কম থাকায় এর নির্মাণ ব্যয়ও থাকে অনেক কম। মোটরের ছোট ছোট টায়ারের চাকায় চলে এসব গাড়ী। চরের বালুর উপর দিয়ে ওই গাড়ীগুলো দিব্যি চলতে পারে। প্রতিটি গাড়ীতে অনায়াসে ১৬ থেকে ২০ মণ কৃষি পণ্য পরিবহন করা যায়। এছাড়া মালামাল পরিবহনের পাশাপাশি চরাঞ্চলের যাত্রী পরিবহনেও ব্যবহৃত হচ্ছে এসব ঘোড়া গাড়ি। এতে চালকসহ ৫ থেকে ৬ জন যাত্রী বালুচর পেরিয়ে দ্রুত তাদের গন্তব্যে পৌঁছতে পারে। বালুচর ছাড়াও এসব টাট্টু ঘোড়ার গাড়ীতে মূলভূখন্ডে এবং উপজেলা পর্যায়ের সড়কেও মালামাল পরিবহন করা হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে একটা ঘোড়ায় টানা গাড়ীতে পাকা সড়কে ৩০ মণ মাল টানা সম্ভব বলেও জানালেন ঘোড়ার গাড়ীর চালকরা।

জেলার সুন্দরগঞ্জ, সাঘাটা, ফুলছড়ি উপজেলাতে ঘোড়ার গাড়ির প্রচলন বেশি। এরমধ্যে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর ইউনিয়নের চৈতন্য বাজার, নিজাম খাঁ ও হরিপুর গ্রাম সাঘাটার পাতিলবাড়ি, দিঘলকান্দি, এরেন্ডাবাড়ি, জুমারবাড়ি, খাটিয়াবাড়ি, সন্যাসীর চর এলাকায় এসব ঘোড়ার গাড়ী দেখা যায়। এরমধ্যে সুন্দরগঞ্জের চৈতন্য বাজার ও নিজাম খাঁ গ্রামেই শুধু রয়েছে চরাঞ্চলে চলাচলকারী ৩০টি ঘোড়ার গাড়ী।

চৈতন্য বাজারের খোরদা নামাপাড়া গ্রামের ঘোড়া গাড়ী চালক ছাত্তার আলী জানান, এসব ছোট্ট আকৃতির ঘোড়া খুব কষ্ট সহিষ্ণু এবং মাল টানায় যথেষ্ট পারদর্শী। ঘোড়া বালুতে চলতে পারদর্শী বলে এসব অঞ্চলে এদের কদর অনেক বেশি। এসব ঘোড়া আকৃতিতে ছোট এবং এদের লেজ অনেক বড়। গাধার চেয়ে এদের উচ্চতা সামান্য বেশি।

দৈনিক গাইবান্ধা

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

শিরোনাম

দেশজুড়ে আরো ৩ দিন হিট অ্যালার্ট জারিন্যাপ এক্সপো-২০২৪ উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রীবদলে গেল গাইবান্ধার ৯ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নামইন্টার্ন চিকিৎসকদের ভাতা বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপনদেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর১৪ কিলোমিটার আলপনা বিশ্বরেকর্ডের আশায়তাপপ্রবাহ বাড়বে, পহেলা বৈশাখে তাপমাত্রা উঠতে পারে ৪০ ডিগ্রিতে‘ডিজিটাল ডিটক্স’ কী? কীভাবে করবেন?বান্দরবানে পর্যটক ভ্রমণে দেয়া নির্দেশনা চারটি স্থগিতআয়ারল্যান্ডের সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রীকে শেখ হাসিনার অভিনন্দনজুমার দিনে যেসব কাজ ভুলেও করতে নেইগোবিন্দগঞ্জে কাজী রাশিদা শিশু পার্কের উদ্বোধন