শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪ || ১৪ চৈত্র ১৪৩০

প্রকাশিত: ১০:৫৫, ১০ মার্চ ২০১৯

অগ্নিঝরা মার্চ: ইতিহাসের এই দিনে

অগ্নিঝরা মার্চ: ইতিহাসের এই দিনে

বাঙালি জাতির স্বাধীনতা সংগ্রামের ঘটনা প্রবাহে নানা কারণেই একাত্তরের গোটা মার্চ মাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যপূর্ণ। উত্তাল এই মাসের প্রতিটি দিনই বাঙালি জাতির জন্য অনুপ্রেরণা আর শক্তির উৎস। আজ অগ্নিঝরা মার্চের নবম দিন। বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণের পর উত্তাল হয়ে ওঠে সারা দেশ, আন্দোলন সংগ্রামে রাজপথে নেমে আসে মুক্তিকামী জনতা।

৭ই মার্চের জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধুর ভাষনের ধারাবাহিকতায় '৭১ সালের এই দিনে মজলুম জননেতা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী বঙ্গবন্ধুর ঘোষণা অনুযায়ী পূর্ব বাংলাকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে ঘোষনা দেওয়ার জন্য পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার প্রতি আহ্বান জানান । ১৯৭১ সালের এই দিনে পল্টনে এক বিশাল জনসভায় মজলুম জননেতা মাওলানা ভাসানী দৃঢ় কন্ঠে বলেন, অচিরেই পূর্ব বাংলা স্বাধীন হবে । মাওলানা ভাসানী তার ভাষণে বলেন,

''প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়াকে বলি, অনেক হইয়াছে, আর নয়। তিক্ততা বাড়াইয়া আর লাভ নাই। 'লা-কুম দ্বীনুকুম অলইয়াদ্বীন'- এর নিয়মে পূর্ব বাংলার স্বাধীনতা স্বীকার করিয়া লও। মুজিবের নির্দেশ মতো আগামী ২৫ তারিখের মধ্যে কোন কিছু করা না হইলে আমি শেখ মুজিবুর রহমানের সহিত মিলিত হইয়া ১৯৫২ সালের ন্যায় তুমুল আন্দোলন শুরু করিব। ‘সাড়ে সাত কোটি বাঙালির মুক্তি ও স্বাধীনতার সংগ্রামকে কেউ দমিয়ে রাখতে পারবে না। হে বাঙালিরা আপনারা খামোকা কেহ মুজিবকে অবিশ্বাস করিবেন না, মুজিবকে আমি ভালো করিয়া চিনি।"

বাংলাদেশের স্বাধীনতার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হয়ে যায় ৭ মার্চের বঙ্গবন্ধুর ভাষণের পরপরই, তবে যখন প্রধান দুই নেতা একসাথে একই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে ঐক্যমত প্রকাশ করেন তখন স্বাধীনতার ক্ষেত্রে আর কোনো সন্দেহের অবকাশ থাকে না।

এ দিন পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর হিসেবে শপথ নেওয়ার কথা ছিল লেঃজেঃ টিক্কা খানের। কিন্তু তখন চলছিল অসহযোগ আন্দোলন। সব কিছুই চলছিল বাঙ্গালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে। এ অবস্হায় টিক্কা খানকে শপথ বাক্য পাঠ করাতে অস্বীকৃতি জানান পূর্বপাকিস্তান হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি বি এ সিদ্দিকী।

 

এছাড়া ৭১ এর এই দিনে এদিকে শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের ক্যান্টিনে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদের বৈঠকে ‘স্বাধীন বাংলাদেশ’ প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদিত হয়। সভায় কয়েকদিনের আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে এক শোক প্রস্তাব গৃহীত হয়। বঙ্গবন্ধুর ডাকে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনে সারাদেশ ছিল অচল। সরকারী-আধাসরকারী স্বায়ত্তশাসিত অফিস, আদালতের কর্মীরা হরতাল পালন করেন।

বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনা মেনে চলছিলো পুরো দেশ, ঘরে ঘরে মানুষ যুদ্ধের প্রস্তুতির সাথে স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নও দেখতে থাকে। অপেক্ষা ছিলো সঠিক সময় ও সুযোগের।

দৈনিক গাইবান্ধা

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

সর্বশেষ